নিউজ ডেস্ক: চল্লিশ জন বিশিষ্ট নাগরিক নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছে আগামী ১২তম জাতীয় নির্বাচন নতুনভাবে আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন। তারা চান, সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ ও ন্যায্য প্রতিযোগিতার সুযোগ সৃষ্টি করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।

এক যৌথ বিবৃতিতে তারা সংসদ ভেঙে দিয়ে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে নির্বাচন আয়োজনেরও দাবি জানান। সংবিধানের ১২৩(৩)(খ) ধারা অনুযায়ী পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার আহ্বান জানানো হয়।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) নামের একটি নাগরিক প্ল্যাটফর্ম রবিবারে এই বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, যদি এই পদক্ষেপগুলি গৃহীত হয়, তাহলে নির্বাচনী সরকারের বিষয়ে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা, সমঝোতায় পৌঁছানো, বিরোধী নেতা ও কর্মীদের মুক্তি বা জামিন দেওয়া এবং একটি নতুন সময়সূচি ঘোষণা করে একটি মুক্ত, সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ থাকবে।

যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকার ও নির্বাচন কমিশন ঘোষিত নির্বাচনী সময়সূচি অনুযায়ী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন একতরফাভাবে আয়োজনের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। নির্বাচনের ঠিক আগে বিরোধী নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে মামলা দায়ের করা, গ্রেপ্তার করা, নির্যাতন করা এবং বিতর্কিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দণ্ডিত করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে প্রতিযোগিতা হবে শাসক দলের মনোনীত প্রার্থীদের ও তাদের কাঠের পুতুল প্রার্থীদের এবং অন্যান্য অনুগত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের মধ্যে। ফলে, বাংলাদেশের নাগরিকরা এই নির্বাচনের মাধ্যমে একটি প্রকৃত বিকল্প নির্বাচনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন এবং প্রকৃত জনগণের প্রতিনিধিত্ব নির্ধারণ করা কঠিন হবে।

গত দুইটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, এই ধরনের নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের কারণে সরকারের জবাবদিহিতা অদৃশ্য হয়ে যায়, রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলি দলীয় সরকারের কাছে নত হয়ে যায়, এটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করে এবং আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন

• হামিদা হোসেন (মানবাধিকার কর্মী)
• এম হাফিজ উদ্দিন খান (সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা)
• আলী ইমাম মজুমদার (সাবেক মন্ত্রিপরিচালক)
• মোঃ আব্দুল মতিন (আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি)
• সালাউদ্দিন আহমেদ (বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর)
• এম সাকাওয়াত হোসেন (সাবেক নির্বাচন কমিশনার)
• আনু মুহম্মদ (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক)
• শহীদুল আলম (ফটোগ্রাফার)
• সি আর আবরার (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক)
• আসিফ নজরুল (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক)
• আহসান এইচ মনসুর (অর্থনীতিবিদ)
• শাহদীন মালিক (সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী)
• বদিউল আলম মজুমদার (শুজন সম্পাদক)
• সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ (শুজন কোষাধ্যক্ষ)
• রাহনুমা আহমেদ (লেখক)
• শারমিন মুরশিদ (ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা)
• কামাল আহমেদ (সাংবাদিক)
• নূর খান লিটন (অধিকার কর্মী)
• ফারুক ফয়সাল (আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক)