|
রাস্তার মোড়ে ‘সিঙ্গাড়া’—স্বাদে, সুখে, স্মৃতিতে এক অনন্য রাজত্ব
এস এম আওলাদ হোসেন
|
|
এস এম আওলাদ হোসেন, জেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর।।
বাংলাদেশের যেকোনো শহর, উপশহর কিংবা গ্রাম—সকাল-বিকেল যখনই হোক, রাস্তার পাশে ছোট্ট দোকানে ধোঁয়া ওঠা সিঙ্গাড়া যেন এক অদ্ভুত টান সৃষ্টি করে। ভাজা খোলসের খচখচে শব্দ, ভেতরের মশলাদার পুরের ঘ্রাণ—সব মিলিয়ে এই খাবারটি শুধু নাস্তা নয়, অনেকের কাছে দৈনন্দিন জীবনের অন্যতম আনন্দ।
লক্ষ্মীপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সিঙ্গাড়ার জনপ্রিয়তা দিন দিন আরও বাড়ছে। ছোট দোকান থেকে শুরু করে বড় রেস্টুরেন্ট—সবখানেই এখন সিঙ্গাড়ার চাহিদা স্থিরভাবে উপরের দিকে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, এক দোকানির ট্রেতে সাজানো টাটকা সিঙ্গাড়ার পাহাড়। প্রতিটি সিঙ্গাড়া হাতেই তৈরি; আকারে ছোট হলেও ভেতরে ভরপুর মশলাদার আলু, পেঁয়াজ, মরিচ ও মশলার মিশ্রণ। তেলে ভাজা হলেও এগুলো দেখতে না অতিরিক্ত ডার্ক, না পোড়া—পরিমাণমতো তেল মিশে খাস্তা ও লোভনীয় এক রূপ পেয়েছে।
স্থানীয় দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিকেলের দিকে সিঙ্গাড়ার বিক্রি কয়েকগুণ বেড়ে যায়। শ্রমজীবী মানুষ থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী, পথচারী—সবাই এক প্লেট সিঙ্গাড়ায় মেটান ক্ষুধা ও ক্লান্তি। দামও সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে হওয়ায় জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে।
এক দোকানি বলেন,“চা আর সিঙ্গাড়া—এই দুইটা মিলে বাঙালির বিকেলটাই জমে ওঠে।”
সিঙ্গাড়া শুধু খাবার নয়, আমাদের সামাজিকতারও অংশ। অফিসে, আড্ডায়, রাস্তার চায়ের দোকানে—যেখানেই গল্প জমে, সেখানেই সিঙ্গাড়ার উপস্থিতি প্রায় নিশ্চিত। ভাজা গরম সিঙ্গাড়ার সঙ্গে টক ঝাল চাটনি হলে তো কথাই নেই—স্বাদ যেন দ্বিগুণ হয়ে ওঠে।
যদিও মাঝে মাঝে মানহীন তেল, পুনঃব্যবহারজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তবে সচেতন দোকানিরা এখন বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে সিঙ্গাড়া তৈরি করছেন। ভাল মানের তেল ব্যবহার করা হচ্ছে, এমন দোকানের সংখ্যাও বাড়ছে।
সব মিলিয়ে বলা যায়—সিঙ্গাড়া বাঙালির নাস্তার জগতে এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী নায়ক। স্বাদ, স্বল্পমূল্য ও সহজলভ্যতাই এই খাবারকে রাস্তার দোকান থেকে মানুষের হৃদয়ে পৌঁছে দিয়েছে।
এস এম আওলাদ হোসেন।
জেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর।।
01637654471
|
