|
বীর মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে জখম!
|
|
সময় নিউজ বিডিঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহ আলম হাওলাদারকে কুপিয়ে জখমের প্রতিবাদে কলাপাড়া উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সামনে শহীদ সুরেন্দ্র মোহন চৌধুরী সড়কে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কলাপাড়া উপজেলা কমান্ডের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন চলাকালে পটুয়াখালী জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এম এ হালিম বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেওয়ায় ইটভাটামালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহ আলম হাওলাদারকে কুপিয়ে জখম করেছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনার পেছনে রয়েছেন টিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান শিমু মিরা। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিতে হবে।’
কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম রাকিবুল আহসান বলেন, ‘চেয়ারম্যান শিমুর “ভাইয়া বাহিনী”র আতঙ্কে টিয়াখালী ইউনিয়নের মানুষের ঘুম ভাঙে। গণমানুষের দুশমন ও চাঁদাবাজ এ বাহিনীর হাত থেকে মুক্তি পেতে আমরা রাস্তায় নেমেছি।’ এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন চাকামইয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. হুমায়ূন কবীর কেরামত। তিনি বলেন, ‘গত ১৫ দিনে চাকামইয়া ইউনিয়নে চারটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব সন্ত্রাসী হামলার নেতৃত্বে ছিলেন টিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিউর রহমান ওরফে শিমু মিরা। তাঁর ভাইয়া বাহিনীর তাণ্ডবে ছয় মাস ধরে চাকামইয়ার মানুষ অতিষ্ঠ ও দিশেহারা। প্রতিনিয়ত মোটরসাইকেল বহর নিয়ে সন্ত্রাসীরা মহড়া দিচ্ছে। সন্ত্রাসীরা আমার পা কেটে নেবে বলে হুমকি দিয়েছে। এখন আমি নিজেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’ মানববন্ধনের পরে একই বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. বদিউর রহমান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ চাকামইয়া ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম হাওলাদার সন্ত্রাসী হামলায় আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা দেশ স্বাধীন করেছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করার জন্য। দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীদের চাঁদা দেওয়ার জন্য নয়।’ গত রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে শাহ আলম হাওলাদার তাঁর মালিকানাধীন বিসমিল্লাহ ইটভাটার কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। এ সময় সন্ত্রাসীরা রামদা দিয়ে তাঁকে কোপায়। সন্ত্রাসীদের রামদার কোপে তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে। সন্ত্রাসীরা লাঠি দিয়েও তাঁকে বেধড়ক পেটায় বলে প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান। তিনি এখন বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ হামলার ঘটনার পর শাহ আলম হাওলাদারের স্ত্রী আকলিমা বেগম বাদী হয়ে রোববার রাতে কলাপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে টিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিউর রহমান ওরফে শিমু মিরাকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও কয়েকজনকে। পুলিশ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে টিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিউর রহমান এবং তাঁর স্ত্রী সাবেক ইউপি সদস্য খাদিজা আক্তার এলিজা, সহযোগী নেছার হাওলাদার, নাঈম ও ইমরান গাজীকে গ্রেপ্তার করেছে। কলাপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আশাদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার ওপর হামলার ঘটনার ইউপি চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা এখন জেলহাজতে রয়েছে। আমরা বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তার করার জন্য জোর চেষ্টা চলাচ্ছি। সবচেয়ে বড় কথা হলো আইনের হাত থেকে কেউই রেহাই পাবে না।’ তিনি আরও বলেন, চাকামইয়া ও টিয়াখালী ইউনিয়নের মানুষের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে। |
