|
পুলিশ বাহিনী ছাড়া আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনই অসম্ভব
এস এম আওলাদ হোসেন।
|
|
এস এম আওলাদ হোসেন, সাংবাদিক ও কলামিস্ট।।
পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা আমাদের দেশেরই সন্তান—রক্ত-মাংসে গড়া মানুষ। দেশের সামগ্রিক পরিবেশ যেমন সাধারণ মানুষের মূল্যবোধ ও আচরণে প্রভাব ফেলে, তেমনি পুলিশ বাহিনীকেও প্রভাবিত করে। বৃটিশ আমলের দমননীতিনির্ভর কাঠামোকে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য পুরোপুরি উপযোগী করে তোলা যায়নি; তাই পুলিশের নামের সঙ্গে এখনও সেই পুরোনো ঘ্রাণ লেগে আছে।
অনেকে মনে করেন, পুলিশ তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে না। অভিযোগ আছে—এটাও সত্য। কিন্তু এটিও স্বীকার করতে হবে যে সব অভিযোগই পুরোপুরি বাস্তব নয়। পুলিশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক ধারণার বড় অংশ তৈরি হয়েছে বহু দিনের অভিজ্ঞতা, ভুল ধারণা ও কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার কারণে।
তারপরও সত্যটি অস্বীকার করার উপায় নেই— পুলিশ বাহিনী ছাড়া আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনই অসম্ভব।
সমাজে আইন-শৃঙ্খলার ভারসাম্য রক্ষা, অপরাধ দমন, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ—এসব দায়িত্ব যদি কেউ নীরবে, নিয়মিতভাবে পালন করে থাকে, তবে তা পুলিশই। আমরা যখন নিশ্চিন্তে ঘুমাই, তখন পুলিশই ঘন্টার পর ঘন্টা টহল দিয়ে আমাদের নিরাপত্তার পাহারা রাখে। সমাজের প্রতিটি অস্থিরতার মুহূর্তে, উৎসবের ভিড়ে, রাজনৈতিক উত্তেজনার আগুনে কিংবা দুর্যোগের মধ্যে—সবার আগে মাঠে নামে এই বাহিনী।
তবুও তাদের প্রশংসা খুব কমই শুনি। সমালোচনা বেশি জোটে। কারণ, পুলিশের ভুল মানুষের চোখে বেশি পড়ে, কিন্তু তাদের সাফল্য সমাজ খুব কমই স্বীকার করে।
আমাদের বুঝতে হবে— একটি ভালো পুলিশ বাহিনী তৈরি হয় কেবল প্রশিক্ষণে নয়; তৈরি হয় ন্যায়বিচার, মানবিকতা, মূল্যবোধ ও একটি স্বাস্থ্যকর রাজনৈতিক-সামাজিক পরিবেশের মাধ্যমে।
যে সমাজ দুর্নীতিগ্রস্ত, অন্যায়মুখী—সেই সমাজ কখনও একটি নিখুঁত পুলিশ বাহিনী আশা করতে পারে না। পুলিশ সমাজেরই প্রতিচ্ছবি।
আমাদের উচিত পুলিশের ভুলগুলো চিহ্নিত করা, সংস্কার দাবি করা এবং একই সঙ্গে তাদের মানবিক দিকটাও বোঝা। সমালোচনার পাশাপাশি প্রাপ্য সম্মানটুকু দেওয়া।
কারণ দিনের শেষে— পুলিশকে অস্বীকার করা মানে নিজের নিরাপত্তাকে অস্বীকার করা।
পুলিশবিহীন সমাজ মানেই বিশৃঙ্খলা, ভয়, অপরাধ আর অন্ধকারের আধিপত্য।
এস এম আওলাদ হোসেন।
সাংবাদিক ও কলামিস্ট।।
01637654471
|
