|
পটুয়াখালীতে ফ্যাসিষ্ট সরকারের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা আমলনামা ভারী ভূমিদস্যু মুছা আকন
নিজস্ব প্রতিনিধি
|
|
নিজস্ব প্রতিনিধি: পটুয়াখালী সদর উপজেলার ৮ নং ওয়ার্ডের আকন বাড়ির বাসিন্দা মুছা আকন। সরকারি চাকরিজীবী থেকে অবসরপ্রাপ্ত এই ব্যক্তি একসময় বরগুনা জেলার আমতলী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে কর্মরত ছিলেন। তবে চাকরিজীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে রয়েছে অসংখ্য প্রতারণা, দুর্নীতি এবং ভূমি দস্যুতার অভিযোগ। রাষ্ট্রের সঙ্গেই প্রতারণাঃ অভিযোগ রয়েছে, চাকরি জীবনে বছরে ৩০ দিনও অফিসে উপস্থিত হতেন না মুছা আকন। বাড়িতেই অবস্থান করতেন, আর সময় কাটাতেন জমি দখলের নতুন নতুন ষড়যন্ত্র আঁকতে। উপস্থিতি খাতায় সই করেই দীর্ঘদিন বেতন, ভাতা, বোনাস এবং অবশেষে পেনশন গ্রহণ করেছেন তিনি। আশ্চর্যের বিষয় হলো, তার এই অনিয়ম ও প্রতারণার বিরুদ্ধে কখনো কোনো তদন্ত হয়নি। ফলে রাষ্ট্রের অর্থ আত্মসাৎ করেও নিরবচ্ছিন্নভাবে তিনি ভোগ করেছেন সব সুযোগ-সুবিধা। মুছা বাহিনী গড়ে অপরাধ সাম্রাজ্যঃ চাকরিজীবনের আড়ালে মুছা আকন গড়ে তোলেন নিজস্ব বাহিনী। অভিযোগ আছে, তারা প্রথমে জমি নিয়ে বিরোধ তৈরি করে, পরে সালিসির নামে সেই জমি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। কাগজপত্রের জটিলতা সৃষ্টি করে জবরদখল করা জমি নিজেদের লোকজনের নামে রেজিস্ট্রি করিয়ে পরবর্তীতে বিক্রিও করে থাকে। স্থানীয় চার্জশিটভুক্ত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই অপরাধচক্র চালাচ্ছেন মুছা আকন। জমি দখলের অভিযোগঃ সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা করেছেন তারই স্বজন আলিম আকন। মামলার মূল বিষয়, পটুয়াখালী জেলার মৌজা-৩৮ এর দাগ নং ৩২৯৩, খতিয়ান-২২৫৩ এর জমি। মামলার অপর বিবাদী মাহফুজুর রহমানের অভিযোগ, এই জমি মূলত তার নানা, প্রয়াত অ্যাডভোকেট আবদুর রবের ক্রয়কৃত সম্পত্তি। তবে মাহফুজের নানার বার্ধক্যের সময়ে মুছা আকন সুযোগ বুঝে জবরদখল করে নেয়। মাহফুজুর রহমান জানান, তার নানা আবদুর রব জমিটি মুছার বাবা যার কাছ বিক্রি করেছেন ( এছিন খাঁ) তার কাছ থেকেই বৈধভাবে কিনেছিলেন। অথচ এই তথ্য জানা থাকা সত্ত্বেও মুছা আকন পুনরায় জমিটি দখল করে নেয়। থানায় জিজ্ঞাসাবাদের সময়ও তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। অন্যদিকে, আলিম আকনের অভিযোগ, ১৯৯৪ সালে মুছা আকন তার সঙ্গে দলিলমূলে জমি কিনলেও সঠিক আনুপাতিক বণ্টন না করে মূল সড়কের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এককভাবে দখল করে রেখেছেন। তদন্ত দাবিঃ স্থানীয়দের দাবি, রাষ্ট্রীয় চাকরিতে অনিয়ম করে বেতন, ভাতা ও পেনশন আত্মসাৎ করা এবং দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ভূমি দস্যুতার মাধ্যমে একাধিক পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্ত করা মুছা আকনের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। যাতে এ ধরনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অন্য কোনো অসাধু ব্যক্তিকে এমন অপরাধে প্ররোচিত না করে। |
