|
“শিক্ষকই জাতির আলোকবর্তিকা”—রায়পুরে গুণী শিক্ষক সংবর্ধনা ২০২৫ অনুষ্ঠিত
এস এম আওলাদ হোসেন
|
|
এস এম আওলাদ হোসেন, সিনিয়র রিপোর্টার।।
“শিক্ষকতাকে একটি সহযোগী পেশা হিসেবে পুনর্গঠন” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় অনুষ্ঠিত হলো “গুণী শিক্ষক সংবর্ধনা–২০২৫”।
উপজেলা শিক্ষা পরিবার (স্কুল ও মাদ্রাসা) আয়োজিত এ বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব ইমরান খান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জনাব মোঃ কামরুল হাসান এবং উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার জনাব মোঃ মাঈন উদ্দিন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জনাব তৌহিদুল ইসলাম।
রায়পুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান — প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কলেজ ও মাদ্রাসা থেকে আগত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে গুণী শিক্ষক সম্মাননা প্রদান করা হয়। সংবর্ধনা প্রাপ্ত শিক্ষকদের হাতে ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন অতিথিরা।
“শিক্ষকরা জাতি গঠনের মূল চালিকাশক্তি। তাদের পরিশ্রম, নৈতিকতা ও আদর্শই একটি উন্নত সমাজ নির্মাণে ভূমিকা রাখে।”
এই অনুষ্ঠানে ‘গুণী শিক্ষক’ হিসেবে সংবর্ধিত হন রায়পুর এল. এম. সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সালেহা বেগম।
সংবর্ধনা গ্রহণকালে তিনি বলেন —“আজকের এই দিনটি কেবল আমার নয়, এটি প্রতিটি নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষকের দিন। আমরা শিক্ষকরা কেবল পাঠ্যবইয়ের জ্ঞানই দিই না, শেখাই জীবনের মূল্যবোধ, সততা ও মানবিকতা।”
তিনি আরও বলেন —“শিক্ষকতা আমার কাছে শুধু একটি পেশা নয়, এটি ভালোবাসা, অঙ্গীকার ও আত্মার তৃপ্তি।”
কোভিড–১৯ মহামারির সময়ও সালেহা বেগম শিক্ষার্থীদের শেখার সুযোগ বন্ধ হতে দেননি।
তিনি “ঘরে বসে শিখি” উদ্যোগের আওতায় ৩২টি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ক্লাস নিয়েছেন এবং সংসদ টেলিভিশনেও পাঠদান করেছেন। তার এই উদ্ভাবনী উদ্যোগের জন্য তিনি অর্জন করেছেন একাধিক সম্মাননা —আইসিটি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাম্বাসেডর, সেরা কনটেন্ট নির্মাতা, সেরা অনলাইন পারফর্মার, এবং ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত শিক্ষক।
সালেহা বেগম বলেন —“প্রযুক্তি শিক্ষাকে আনন্দময় করে তুলেছে। এখন শিশুরা শিখছে আগ্রহ নিয়ে, আনন্দের মধ্য দিয়ে।”
প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান খান তার বক্তব্যে বলেন —“শিক্ষক সমাজের প্রকৃত পরিবর্তন-স্রষ্টা। শিক্ষককে মর্যাদা দেওয়া মানে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সম্মান করা।”
সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম বলেন -“শিক্ষকরা শুধু পাঠদানেই সীমাবদ্ধ নন, তারা নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধের পথপ্রদর্শক।”
অনুষ্ঠান শেষে ক্রেস্ট ও ফুল দিয়ে সম্মাননা প্রাপ্ত শিক্ষকবৃন্দকে অভিনন্দন জানানো হয়। উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষিকারা বলেন, এই ধরনের আয়োজন শিক্ষকদের মনোবল বাড়ায় এবং সমাজে শিক্ষকের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বড় ভূমিকা রাখে।
“গুণী শিক্ষক সংবর্ধনা–২০২৫” শুধুমাত্র এক দিনের আয়োজন নয়, এটি শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের প্রতীক। রায়পুর উপজেলার শিক্ষাব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে যারা নিবেদিতভাবে কাজ করছেন — তাদের হাতেই গড়ে উঠবে আগামী দিনের আলোকিত বাংলাদেশ।
|
