মু,হেলাল আহম্মেদ(রিপন)
পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর সদর উপজেলা লোহালিয়া ইউনিয়নের পালপাড়া ঘাট ইজারা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে হামলার শিকার হয়েছে সদর থানার পুলিশ সদস্যরা।
গত বুধবার( ৮ অক্টোবর) রাতে সদর উপজেলার লোহালিয়া ইউনিয়নের পালপাড়া বাজার এলাকায় ঘাট নিয়ে এ ঘটনাটি ঘটে।
এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাধ্য হয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ শট গানের দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যসহ মোট আটজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতরা পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লোহালিয়া ইউনিয়নের পালপাড়া বাজারে সোহাগ মাঝি (পিতা রফিক মাঝি, সাং পাজাখালি) ও মফিজুল মৃধা (পিতা সুলায়মান মৃধা, সাং পাজাখালি) এই দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার দিন বুধবার সন্ধ্যায় সোহাগ মাঝি প্রায় ২০-২৫ জন অনুসারী নিয়ে পালপাড়া বাজারে প্রবেশ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
বিষয়টি স্থানীয়রা জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করলে পটুয়াখালী সদর থানা থেকে বিট অফিসার এসআই রাসেল, এএসআই জহিরুল ইসলাম, এএসআই আব্দুর রহমান এবং মোবাইল-১১ টিম ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।
পুলিশের উপস্থিতি দেখেই সোহাগ মাঝির অনুসারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। এসময় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং এসআই জহিরুল ইসলাম, এএসআই আব্দুর রহমান, কনস্টেবল মুহিবুল্লাহ ও ড্রাইভার কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই গুরুতর আহত হন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শটগান থেকে দুই রাউন্ড গুলি ছোড়ে। পরে সোহাগ মাঝির দল দা, সুরকি ও লাঠি নিয়ে মফিজুল মৃধার ওপর হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) অপু চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সাজেদুল ইসলাম সজল এবং ওসি পটুয়াখালী সদর থানা ইমতিয়াজ আহমেদ ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
এদিকে আহত মফিজুল মৃধাসহ অন্যান্য আহতদের পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশের আহত সদস্যদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য স্পিডবোটযোগে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনার পর এলাকাজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাজার ও আশপাশের এলাকায় এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সাজেদুল ইসলাম সজল বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছ। এই ঘটনায় পটুয়াখালী সদর থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
আহত পুলিশ সদস্যরা পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বর্তমানে তারা সুস্থ রয়েছেন। গুরুতর আহত মফিজুল মৃধাকে ঢাকায় প্রেরন করা হয়েছে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে লোহালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কামাল মৃধা বিষয়টি নিশ্তিত করেছেন।